ব্যবসায়ের জন্য ওয়েবসাইট করা অপ্রয়োজনীয়?

ওয়েবসাইট

ব্যবসায়ের জন্য ওয়েবসাইট করা অপ্রয়োজনীয়?
আপনার ব্যবসায়ে মুলধন যদি খুবই কম থাকে, নিজস্ব কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ না থাকে। সেক্ষেত্রে বিজনেস ওয়েবসাইট করাটা আপনার জন্য ঠিক হবেনা। ওয়েবসাইট ম্যানেজ বলেন প্রোডাক্ট পোস্টিং বলেন, প্লাগিনের ব্যবহার বলেন কম্পিউটার লাগবেই। তবে আপনি অবস্থার উন্নতির পর যে নামে ওয়েবসাইট করবেন, সেই ওয়েবসাইটের ডোমেইনটা আপাতত নিয়ে রাখুন।
তবে যাদের নিজস্ব পিসি আছে, অবস্থা একটু ভালো, তাদের বিজনেসের জন্য ওয়েবসাইট আসলেই দরকার।
আপনার অফিস দোকান যতই ঝকঝকে তকতকে থাকুক, সেখানে কজনই বা আসবে? করোনা পেন্ডামিকে, অসহ্য ট্রাফিক জ্যাম এবং গরমে মানুষ বাইরে যাওয়া অনেক কমিয়ে দিয়েছে। তার উপর যোগ হয়েছে পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি। মানুষ এখন আপনার ব্যবসা অথবা দোকান দেখতে প্রথমে আপনার ফেসবুক পেজে এরপর ঢুকবে আপনার ওয়েবসাইটে।
ফেসবুক পেজে লাখলাখ ফলোয়ার থাকলেও যখন দেখবে আপনাদের ওয়েবসাইট নেই, আপনার বিজনেসের প্রতি স্ট্রাস্ট অনেকাংশেই কমে যাবে। প্রফেশনাল লুকটা থাকবেনা। আপনার ওয়েবসাইট থাকা মানে, You’re serious, আজ আছি কাল গায়েব হবেননা। কারণ একটা ওয়েবসাইটে করা মানে এক ধরনের স্মার্ট আনুষ্ঠানিকতা বলা যায়। আপনি ব্যবসায়ে সিরিয়াস বলেই ওয়েবসাইট বানিয়েছেন, অর্থাৎ ব্যবসা নিয়ে আপনার দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা।
ফেসবুক পেইজ প্রথমদিকে ভালো, তবে একক্লাসে যেমন বেশিদিন থাকা ঠিকনা। ঠিক তেমনি শুধুমাত্র ফেসবুক পেইজ দিয়ে দীর্ঘদিন ব্যবসা করে গেলে প্রশ্ন উঠবে আপনার ব্যবসায়ের দক্ষতার উপর।
অনেকেই আছে, কোথাও চাকরিবাকরি পাচ্ছেনা অথবা ফ্রি আছে, ফেসবুক পেইজ ক্রিয়েট করে ব্যবসা শুরু করলো। অন্য ভালো কাজ পেলো ফেসবুক পেইজ বন্ধ।
এছাড়া অধিকাংশ স্ক্যাম হয় ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। তাই শুধুমাত্র ফেসবুক পেইজ দিয়ে কন্টিনিউ করলে, ব্রান্ডভ্যালু ধরে রাখা কঠিন। স্ট্রাস্ট ধরে রাখা কঠিন।
কেন ওয়েবসাইট প্রয়োজনীয়?
এখন Door to Door মার্কেটিং এর সুযোগ একদমই কমে যাচ্ছে। আবার শুধুমাত্র ফেসবুক বুস্ট প্রমোট করেও সুফল আসছেনা।
একটা ওয়েবসাইট থাকা মানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক বড় একটা শক্তি। কেউ যদি কোনওভাবে একবার আপনার ওয়েবসাইটে চলে আসে, পিক্সল সেটের মাধ্যমে ফেসবুক প্রমোট করে তাকেই বারবার আপনার বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবেন।
কি বিশ্বাস হচ্ছেনা? প্রমাণ দিচ্ছি। ধরুন আপনি একটা টিশার্ট কিনবেন। বিখ্যাত কোনও টিশার্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ঢুকুন। দুই-একদিনের মধ্যেই টের পাবেন, আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে বারবার তাদের ওয়েবসাইটের সেই টিশার্টের এড পাবেন। এটা অনেকদিন চলবে।। শুধু তাইনা, একটা ওয়েবসাইট মানে ইমেইল মার্কেটিং বলেন SEO বলেন অথবা গুগল এড বলেন। সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন।

ফেসবুক পেইজ আপনার না।
অপ্রিয় সত্য হচ্ছে, ফেসবুক পেইজ আপনি ক্রিয়েট করলেও এটা আপনার নয়, এটা ফেসবুকের। ফেসবুক পেইজ ডিজেবল হয়ে যেতে যেকোনো সময়ই। ফেসবুক তাদের পেইজ ডিজেবল হবার কারণ যা দেখায়, তা অধিকাংশ সময়ই তার মাথামুণ্ডু থাকেনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো রিকভার করা যায়না। আর আপনার ফেসবুক পেইজের যারা ফলোয়ার তাদের তথ্য আপনার কাছে থাকেনা। কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটে যারা একাউন্ট খোলে অথবা সাবস্ক্রাইব করে, তাদের ইনফরমেশন আপনার কাছে থাকে, আপনি চাইলে তাদের সবার সাথেই যোগাযোগ করতে পারেন।

কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?
হয়তো বলবেন, “বুঝলাম ওয়েবসাইট উপকারী, ব্যবসায়ে প্রচারের শক্তি, ব্রান্ডভ্যালুও বাড়ে। কিন্তু কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরী করবো?”
আপনার বাজেট কম হলে এবং আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকলে, নিজেনিজেই তৈরী করতে পারবেন ইউটিউব ভিডিও দেখে অথবা বই পড়ে। ইউদেমীতে অনেক ফ্রি অথবা পেইড ভিডিও ওয়েবসাইট তৈরীর উপর সেগুলোও দেখতে পারবেন। অনেকেই পারছেন আবার অনেকেই পারছেননা। তবে আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকলে আপনি অবশ্যই পারবেন। তবে যদি আপনার অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা না থাকে, তাহলে কৃপণতা করে নিজে সাইট বানানোর রিস্ক না নেয়াটাই ভালো। কারণ আপনার হবু ক্লাইন্ট যখন আপনার সাইটে ঢুকবে, তাদের অবচেতন মন কিন্তু ঠিকই ধরে নেবে এটা প্রফেশনাল কারও হাতে তৈরী না। সে দ্রুত বের হয়ে যাবে। এতে আপনার ওয়েবসাইটের ক্ষতিকর Bounce Rate বেড়ে যাবে। বিক্রিবাড়ুক এর মতো, যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ক্লাইন্টসদের জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে যাচ্ছে, তাদের হাত কিন্তু পেকে যাচ্ছে। শুধু তাই-ই না, User experience অর্থাৎ অধিকাংশ ক্ষেত্রে একজন ক্লাইন্ট কোন ওয়েবসাইটে ঢুকে ডান দিক থেকে বাম দিকে তাকায় নাকি বাম দিক থেকে ডান দিকে তাকায় এসব, কোন রঙ কি প্রভাব ফেলে, কোন কন্টেন্ট হুক করবে, এসব বিষয়ে তারা অভিজ্ঞ, প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত।
একটা প্রশ্ন করছি, ধরুন আপনি ওয়েস্টিন হোটেলে একটা পার্টিতে জয়েন করবেন। যেখানে সম্ভাব্য ক্লাইন্টসদের সাথে মিটিং করবেন। যেখানে আপনার প্রতিযোগীরাও যাবে। আপনার কাছে স্যুটের কাপড় আছে আর আছে পর্যাপ্ত সময়। এখন আপনি কি করবেন? ইউটিউব দেখে স্যুট বানিয়ে যাবেন নাকি অভিজ্ঞ টেইলারকে দিয়ে বানাবেন?

কার কাছে বানাবেন?
অনেককেই পাবেন, অনেক প্রতিষ্ঠানকেও পাবেন, যারা ৫০০০ টাকায় অথবা ৭০০০ টাকায় ওয়েবসাইট তৈরী করে দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে অনেক ক্রাক থিম ইউজ করা হয়, ক্রাক প্লাগিন ইউজ করা হয়। যার কারণে একটা সময় ওয়েবসাইট মুখ থুবড়ে পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেখানে ইম্পোর্ট সাইটকে ড্রাগস এন্ড ড্রপ করে আপনার সাইট বানানো হয়। যেহেতু অন্য ওয়েবসাইট এর ঘষামাজা করে আপনার সাইট হচ্ছে। সেখানে অন্যের কন্টেন্ট কিন্তু থেকেই যায়। গুগল আপনার সাইটকে কপিরাইট ক্লেম ধরে যেকোনো সময়ই Google Kick এর শিকার হতে পারেন। আপনার যদি দীর্ঘমেয়াদী ওয়েবসাইট কন্টিনিউ করার প্লান থাকে, তাহলে সস্তায় সাইট না করার আহবান জানাচ্ছি।

কেন বিক্রিবাড়ুক?
বিক্রিবাড়ুক ডটকম দেশে বিদেশে যাই ওয়েবসাইট করুকনা কেন অভিজ্ঞতা এবং মমতা মিশিয়ে কাজ করে। একজন ব্যবসায়ীর কাছে ব্যবসা হচ্ছে সন্তান তুল্য। ওয়েবসাইট হচ্ছে সেই সন্তানের পোশাক। এমন পোশাক আমরা বানাবার চেষ্টা করি, যেটাতে আব্রু ঢাকে, ব্যাক্তিত্ব বাড়ে।
• আমরা ওয়েবসাইটের সৌন্দর্যের দিকে মনোযোগ দেই ঠিকই, তবে সুন্দর করতে গিয়ে সাইটকে ভারি বানিয়ে ফেলিনা। ওয়েবসাইট যদি হালকা হয়, স্পিড বাড়ে। স্পীড কম মানেই ওয়েবসাইটের ক্ষতি। একজন ঢোকার চেষ্টা করছে, অথচ Loading Loading Loading সে দ্রুত বের হয়ে আসবে। এতে বেড়ে যাবে ক্ষতিকর Bounce Rate.
• আমরা User Experience দিকে মনোযোগ দিয়ে সাইট সাজাই। আপনার সাইটে কোন ধরনের লোক আসতে পারে। তারা কোন বাটন খোজার জন্য সাধারণত কিভাবে চোখ বুলাতে পারে, এর অনুমান করে Button বসাই, কন্টেন্ট সাজাই। আমাদের আছে User Experience এর উপর প্রশিক্ষণ।
• Content এবং SEO বান্ধব। একটা ওয়েবসাইটের প্রানই হচ্ছে কন্টেন্ট। কন্টেন্টের সাথে জড়িত সাইকোলজি। না আমরা সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করিনি। তবে Content Marketing এবং Psychology of Marketing নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে কিছুটা ধারণা হয়েছে। আমরা অভিজ্ঞতার আলোকে ক্লাইন্টকে পরামর্শ দেই, এই এই কন্টেন্ট রাখা উচিৎ, এই এই কন্টেন্ট বাদ দেয়া উচিৎ। আর SEO বন্ধব প্রসঙ্গে আসি। আমরা অনেকেই SEO খুব ভালোভাবে না জানার কারণে এমন এমন সব ভুল ওয়েবসাইট তৈরীর সময় করে ফেলি, যা নিজের অজান্তেই ওয়েবসাইটকে ঠেলে দেই ব্লাকহ্যাট SEO এর পথে। যার রেজাল্ট Google Kick. একবার Google Kick খেলে সেই সাইটের SEO সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়। অনেকটা দাগী আসামীর মতো। আমরা খেয়াল রাখি,কন্টেন্ট সাজানো অথবা সাইট বিল্ডের সময় এমন কিছু যেন না হয়, যা SEO এর জন্য হুমকিস্বরূপ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ, এতক্ষন সাথে থাকার জন্য। আপনার ব্যবসায়ে বিক্রি বাড়ুক।

আমাদের ওয়েবসাইট সার্ভিসের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে…

Please share it

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *