চিন্তা ও ব্যবসাঃ মুলধন
ব্যবসায়ের সবচেয়ে বড় মুলধন কি?
প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই যেটা মাথায় আসে, সেটা হচ্ছে টাকা।
• “তুই ব্যবসা করবি? ব্যবসা করতে অনেক টাকা লাগে।”
• “কিছু টাকা পাইলে দেখি একটা ব্যবসা শুরু করমু।”
• “আমার টাকা নাই ভাই, তাই আমারে দিয়া ব্যবসা হইবোনা।”
আরও অনেক উদাহরণ আছে, যা দিলে ব্লগ বড় হবে। এসবই প্রমাণ করে দেয়, আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। ব্যবসায়ের আসল মুলধন টাকা। ম্যানেজমেন্ট, ব্যাংকিং সিস্টেম এটা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, ব্যবসায়ের সবচেয়ে বড় মুলধন “চিন্তার বিশাল এক সেট”। উহু একটা দুইটা চিন্তা নয়, বিশাল চিন্তার একটা সেট। আমি যে ল্যাপটপে লিখছি, সেটার নানা জিনিস আছে, মাদারবোর্ড, কিবোর্ড, মাউস, নানারকম সফটওয়্যার, ব্যাটারি চার্যার এটা সেটা, অর্থাৎ এসব জিনিসের সেট হচ্ছে এই ল্যাপটপ। কারেন্ট দিয়ে চার্য দিচ্ছি। কারেন্টকে তুলনা করা যেতে পারে ফিনান্সের সাথে। তবে সেই চিন্তার সেটে থাকতে হবে এক্সিকিউশন পাওয়ার। যেটা বাস্তবায়ন যোগ্য নয়, সেটা না। সেটার থাকতে হবে অর্থলাভের ক্ষমতা। যেটা মানিটাইজের যোগ্যতা না সেটা নয়।
ব্যবসায়ের প্রকৃত মুলধন হচ্ছে অনেকগুলো চিন্তার সুসংগঠিত সমষ্টি। হয়তো নেপোলিয়ন হিলের Think & Grow Rich পড়ার পরই Think কে আমার অবচেতন মন মুলধন হিসেবে ধরে নিয়েছে।
আপনার টাকা নেই। কিন্তু আপনি জানলেন সাভারে একটা ট্রাকের ভারি ইঞ্জিন খুব সস্তায় বিক্রি হবে, বিশেষ কারনে। আপনার পরিচিত এক ট্রাকের গ্যারেজও সেই ইঞ্জিন খুজছিলো, যেটা দেশে হঠাৎ করেই পাওয়া যাচ্ছিলোনা। দুইটা ঘটনা আপনার চিন্তার জগতে রান্না করলেন। অল্প টাকা লাগবে এখানে। এই সুযোগটার কথা শেয়ার করে টাকা ধার চাইবার সাহস আপনার তৈরী হলো। (যেরকম সাহস তৈরী হয়, শেয়ারবাজারের তৃণমূল ব্যবসায়ীদের। “ভাবি শেয়ারের দাম অনেক কম। কিনলেই লাভ।” অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেবর লস খায় সরলতার কারনে। ভাবিরাও টাকা ফেরত পায়না।) চিন্তা এতটাই আপনাকে টগবগে করলো, আপনার চোখেমুখে আগুন দেখে কয়েকজনের কাছে ঘুরেই টাকা ধার পেলেন।
আপনি লাভবান হলেন। ধারও শোধ করলেন। আপনি মজা পেয়ে গেলেন। টুকটাক সম্পত্তি বেচে টাকা জোগাড় করে আরও বড় পরিসরে সুযোগ খুজলেন। পেলেন। লাভবান হলেন। আপনার ক্যাশ মুলধন বাড়তে লাগলো।
“চিন্তা” মুলধন হিসেবে স্বীকৃতি পাবেনা। কিন্তু “এক গুচ্ছ চিন্তার সুবিন্যাস” কিন্তু সবচেয়ে বড় মুলধন হিসেবে ধরা দিলো।
সম্ভবত এই কারনেই হয়তো একপ্লাটুন শ্রমিকের সবার বেতনের সমান একজন মেধাবী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার। কারণ তাদের বাস্তবায়ন যোগ্য চিন্তার ফ্লো থেকেই আসে অনেক অনেক টাকা।
ফাউন্ডার বিক্রি বাড়ুক এবং টাইম ২০২৫
masud@bikribaruk.com
অসাধারণ সুন্দর লিখেছেন আপনি। অভিনন্দন❤️❤️
অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই।